Tuesday, June 26, 2018
হুজুর স্বামী
মামাত ভাইকে বিবাহ করাবো। পাত্রী ও মাশাআল্লাহ পছন্দ হয়েছে। উভয় পরিবার সম্মত। পাত্রী আমার বন্ধুর বন্ধুর বোন।
.
মামাতো ভাইটি ও মাশাআল্লাহ হাফেজ আলেম। এমন পাত্রকে কে হাতছাড়া করবে!! দেখতে শুনতে, পড়া লেখায়, অর্থ সম্পদে, সামাজিক অবস্থানে হাজারে না হোক অন্তত শত ছেলের মাঝে বেছে নেওয়ার মত।
.
মেয়ে পক্ষ বেশ কয়েকবার মামাদের বাড়ীতে এসেছে। ছোটখাট খাবারের আয়োজন ও হয়েছে। বিয়ের স্থান দিন তারিখ সব ফাইনাল।
.
বিয়ের দু"দিন আগে মেয়ের বাবা ফোন দিয়ে বললো। বিয়েটা হচ্ছে না। মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। বড় ছেলে হিসেবে মামাদের অনেক বড় আয়োজন করার প্ল্যান ছিল। এত আয়োজন!! আত্মীয় স্বজন!! নিমন্ত্রন দাওয়াত সব সম্পন্ন।
অথচ এ মুহূর্তে না??
আত্মীয়রা আশ পাশের মানুষ কি ভাববে এ চিন্তায় মামা পুরাই জমে পাথর হয়ে গেলেন।
.
ভেবেছি মেয়ের হয়তো কোথাও সম্পর্ক আছে। বর্তমান সময়ে তা আশ্চার্যের নয়। তাই মেয়ের বাবার সাথে সরাসরি কথা বললাম।
.
কিন্তু না!!!
না করে দেয়ার কারন ভিন্ন কিছু!! তা হলো "মেয়ের হুজুর দাঁড়িওয়ালা জামাই পচন্দ না" প্রয়োজনে সারা জীবন আইবুড়ো হয়ে থাকবে তবু হুজুর জামাই নট এলাও। খুব রাগ হলাম মেয়ের বাবার উপর!! মেয়ের মতামত না নিয়ে তবে কেন আমাদের কথা দিলেন। সবার চোখে আমাদের ছোট বানালেন!! বেচারা ও কি করবেন। বহু চেষ্টা করেছেন কিন্তু মেয়েকে বুঝাতে সক্ষম হয়নি। লজ্জায় তিনি মাথা নিচু করে আছেন।
.
এবার রাগটা গিয়ে পড়লো মেয়েটির উপর। মনে মনে ভাবলাম দেখি চান্দু!! তুমি কোন রাজপুতের ঘর কর!! দাঁড়িবিহীন কোন সুপুরুষ তোমার কপালে জুটে!! আমি দেখার অপেক্ষায়...............
.
আমি কিছুদিন পর পর তার খোজ নিতাম। শুনেছি দাঁড়িবিহীন এক রাজপুতের সাথে তার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু তার শাশ্রুবিহীন সেই স্মাট স্বামী তার মধু রেখে অন্য মৌচাকের মধু পানে ব্যস্ত ছিলো। স্বামীর প্রবাসি ভাইয়ের স্ত্রীর (বড় ভাবীর) সাথে ছিল তার অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক। মেয়েটি বিয়ের পর তা জানতে পেরেছে। মেয়েটি তার প্রতিবাদ করায় উল্টো স্বামী ও বড় ভাবী কতৃক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। বিষয়টি বহুদূর গড়ায় এক পর্যায়ে পুরো এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এটা প্রকাশের কারনে ছেলের পুরো পরিবার দায়ী করেছে মেয়েটিকে।
.
লাজ্জায় ক্ষোভে অপমানে মেয়েটি বেশ কয়েকবার নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাপ ভাইয়ের মাথায় জেঁকে বসেছে।
শাশ্রুবিহীন নায়কের হাত ধরে রাস্তা ঘাটে মার্কেটে পার্কে ঘুরে বেড়ানোর কল্পিত স্বপ্ন ফানুস হয়ে উড়ে গেছে।
এখন কান্না আর একাকিত্বই তার নিত্য সঙ্গী। বুঝেন তো এ সমাজে একটা ডিভোর্সি মেয়েকে কোন দৃষ্টিতে দেখা হয়.............
.
আর আমার মামাত ভাইটি মাশাআল্লাহ। এক শাহজাদা ও এক শাহজাদীর বাবা। তারঁ সামাজিক অবস্থান, ইনকাম সোর্স, শশুর বাড়ীর অবস্থান, স্ত্রী ও ফুটফুটে সন্তানদের দেখলে যে কারো ইর্ষা হবে।
সবই আল্লাহর করুনা.......
Subscribe to:
Post Comments (Atom)

No comments:
Post a Comment